একজন বৃদ্ধের শেষ ইচ্ছা
ইকো পার্কের সহস্রধারা ঝর্নায় গোসল করে
গেলাম সীতাকুণ্ড বাজারে দুপুরের খাবার খেতে। খাবার শেষ করে যাত্রা শুরু
করলাম চন্দ্রনাথ মন্দিরের উদ্দেশ্যে। বাজার থেকে অটো রিকশা নিয়ে গেলাম
মন্দিরের গেইট পর্যন্ত তারপর হাঁটা শুরু করলাম। কিছু দূর যাওয়ার পর দোকান
পেলাম সেখান থেকে বাঁশ নিয়ে নিলাম। বাঁশ ছাড়া উঠা কষ্টকর আমার দুই বন্ধুও
বলছিল বাঁশ লাগবে না কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পর ওরা বাঁশ নিতে বাধ্য হলো। ১০ মিনিট হাঁটার পর সিঁড়ি পেলাম।যত উপরে
উঠছিলাম ততো আরও খাঁড়া সিঁড়ি পাচ্ছিলাম। ভরা পেটে উঠতে সবার কষ্ট হচ্ছিল
অর্ধেক সিঁড়ি পার হবার পর আমাদের ৭ জনের দল ভাগ হয়ে গেলো ৩ টি দলে। আমি
আর আরেক বন্ধু ছিলাম মাঝের দল। কিছুদূর যাওয়ার পর ছবির এই ৮১ বছরের
বৃদ্ধের দেখা পেলাম প্রথম মনে করলাম বৃদ্ধ মন্দিরের পুরোহিত কিন্তু কথা বলে
জানতে পারলাম উনিও আমাদের মতো প্রথম এসেছেন এবং সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়
হলো এই চন্দ্রনাথ মন্দির দর্শন করাই ছিলো তার জীবনের শেষ ইচ্ছা। উনার সাথে
একটি ছেলে ছিলো তার হাতে পানির বোতল ছিলো কিন্তু উনি একবারও পানি পান করেন
নি এবং আমাদেরও পানি কম খেতে বলছিলেন। বৃদ্ধের সাথে কথা বলে উৎসাহ পেলাম
এবং কথা বলতে বলতে উঠে গেলাম মন্দিরে। উঠে যা দেখলাম তাতে সমস্ত ক্লান্তি
দূর হয়ে গেলো।একপাশে সাগর একপাশে পাহাড় যা দেখে আমাদের কষ্ট সার্থক ।
যারা যাবেন তাদের প্রতি কিছু উপদেশ হলো-
বাঁশ নিয়ে উঠবেন এবং ভরা পেটে না যাওয়া ভালো কারণ উঠতে অনেক কষ্ট হবে।
যেভাবে যাবেন :
বাংলাদেশের যে কোন জায়গা থেকে সীতাকুণ্ড বাজার
/ফেনী ( ফেনী তে নামলে মহিপাল থেকে বাসে সীতাকুণ্ড বাজার আসতে হবে- ভাড়া
৫০টাকা), এরপর হাইওয়ে থেকে বাজারে নামে অল্প একটু হাঁটলেই কলেজ রোড যেখান
থেকে মন্দিরের পাদদেশ পর্যন্ত ১৫টাকা সিএনজি ভাড়ায় চলে যেতে
পারেন।চন্দ্রনাথ ট্র্যাকিং এর সময় প্রথম যে ঝর্ণা পড়বে সেখানে দুইটা রাস্তা
পড়ে একটা ছোট ধাপের সিঁড়ি আরেকটা বড়ধাপের সিঁড়ি। বাম পাশের ছোট ধাপের
সিঁড়ি বেয়ে উঠা সহজ।এতে প্রথমে বিরুবাক্ষ মন্দির পড়বে তারপর চন্দ্রনাথ হয়ে
ডান পাশের সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসলে তাড়াতাড়ি হবে।এরপর সোজা সীতাকুণ্ড বাজারে
ফিরে আসুন।১০টাকা ভাড়া দিয়ে চলে যান কুমিরা ঘাট বাজার।সেখান থেকে ১০টাকায়
অটোতে করে চলে যান কুমিরা ঘাট।
সতর্কতা :
যত হালকা ব্যাগ নিয়ে
উঠতে পারেন তত ভালো, পানি,স্যালাইন আর হালকা স্ন্যাকস সাথে রাখবেন আগ
থেকেই।ট্র্যাকিং এর সময় কয়েকটা দোকানে পাওয়া গেলেও গলাকাটা দাম
রাখবে।বিশ্রাম নিয়েন কিছুক্ষণ পরপর আর আমলকী রাখতে পারেন সাথে প্রচুর
এনার্জি টনিক হিসেবে কাজ করবে। সবচেয়ে বড় কথা ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে যে আপনি
পারবেন।
No comments:
Post a Comment